Wednesday, November 16, 2016

ফেসবুক বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইন করা গেলে খুব ভালই সাড়া পাওয়া যায়।


যদিও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পেইড মার্কেটিং এর কিছু সার্ভিস দেয়া আছে, তারপরও বাংলাদেশ সহ আরও কিছু দেশে থার্ডপার্টি পেইড মার্কেটিং খুব প্রচলন রয়েছে। আমি দুটি বিষয়েই আলোকপাত করব। সাথে মার্কেটিং এর নেগেটিভ পজেটিভ দুটো দিকই তুলে ধরব।
থার্ড পার্টি মার্কেটিংঃ
বর্তমানে বাংলাদেশে এই মার্কেটিংটা বেশ গ্রহণযোগ্য। এই মাধ্যমে ফেসবুকে বিভিন্ন বহূল ফ্যান সম্বলিত পেইজ গুলো থেকে আপনার ব্র্যান্ডের পেইজটি প্রমোট করা হবে। এতে আপনার পেইজের লাইক বাড়বে। এই পদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতার কারণ হল, এতে ফেসবুক বিজ্ঞাপন দেয়ার চেয়ে অনেক কম খরচে লাইক বা ফ্যান পাওয়া যায়। এই পদ্ধতির পজিটিভ এবং নেগেটিভ দিক গুলো দিলাম,
পজিটিভঃ
1. অল্প খরচে উল্লেখযোগ্য পরিমান লাইক পাওয়া যায় (১০০০ লাইক ৪০০-৮০০ টাকা)।
2. ডিল বা ক্যাম্পেইন শুরু করার আগেই আপনার সাথে একটা ব্যাপার ফিক্স করা হয় যে, এত টাকা দিয়ে আপনাকে এত লাইক দেয়া হবে। অর্থাৎ লাইক সংখ্যা আপনি আগে থেকেই জানতে পারবেন।
3. সঠিক এবং সুন্দর ক্যাপশান ব্যবহার করে প্রমোট করা হলে ভাল মার্কেটিং হয়। ক্যাম্পেইন চলাকালীন আপনি ভাল রেস্পন্স পাবেন, ক্যাম্পেইন শেষেও সংগৃহীত লাইক গুলোকে যদি এঙ্গেজ রাখতে পারেন (পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে এঙ্গেজ রাখা নিয়ে) তবে তাদের মধ্যে থেকে অনেক কঞ্জিউমার পাবেন।
4. অনেকের অল্প সময়ে পেইজে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লাইক দরকার হয়, এবং বাজেটও কম থাকে। তবে এই পদ্ধতি তাদের জন্য খুব ইফেক্টিভ।
নেগেটিভঃ
এই পদ্ধতির নেগেটিভ দিক গুলো বেশি মারাত্নক হয়। নেগেটিভ দিক গুলো সম্পর্কে দেয়া হলঃ
1. খুব স্পিডে যদি আপনার ক্যাম্পেইন চলে, ধরুন দিনে ২-৩ হাজার লাইক, তবে ফেসবুক আপনার পেইজে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাপার হচ্ছে বলে ডিটেক্ট করতে পারে। কারণ ফেসবুক বুঝতে পারবে যে আপনার পেইজে কোন বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইন হচ্ছে না, তাহলে এত তারাতারি কিভাবে লাইক বাড়ছে? (বি. দ্রঃ একবার মেইল পেয়েছিলাম ফেসবুক থেকে)
2. ব্র্যান্ড পেইজ গুলো যখন এভাবে শেয়ার দিয়ে প্রমোট করা হয়, তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সঠিক ক্যাপশান (অর্থাৎ আপনার পেইজটি যে উদ্দেশ্যের সে রিলেটেড ক্যাপশান) দিলে লাইক পরে নাহ। এজন্য আপনি যার সাথে লাইক দেয়ার ডিল করেছেন সে আপনার পেইজকে বিভিন্ন আকর্ষনীয় ক্যাপশানে শেয়ার দিতে পারে, যেমন “পেইজে লাইক দিন, লাইক দিলেই ইনবক্সে পুরষ্কার” , “অমুকের স্ক্যান্ডাল বের হয়েছে, এই পেইজে পাবেন” , “ফ্রী নেট ব্যবহারের লিঙ্ক এই পেইজে” এসব ক্যাপশান দিয়ে আপনার পেইজ শেয়ার দেয়া হলে, উলটো নেগেটিভ মার্কেটিং হয়। আমার মনে হয়না কেউ চাইবেন টাকা খরচ করে নিজের ব্র্যান্ডের নাম খারাপ করতে।
3. অনেক সময় যেসব পেইজ থেকে আপনার পেইজ প্রমোট করা হয় সেসব পেইজ মানসম্মত হয়না। ধরুন এডাল্ট কমিক্সের পেইজ থেকে আপনার ব্র্যান্ড পেইজ প্রমোট করা হল, সেক্ষেত্রে নিশ্চয় আপনার পেইজের ফেয়ার মার্কেটিং হবে না। আর নিশ্চয় ঐ এডাল্ট পেইজে প্রোডাক্ট কেনার মত কোয়ালিটি ফ্যান থাকবে নাহ।
সতর্কতাঃ
তবে সতর্কতার সাথে যদি ক্যাম্পেইন করা যায়, তবে এ ধরনের ক্যাম্পেইন খুব একটা খারাপ নাহ। নিম্নের সতর্কতা গুলো মেনে চললেই হবেঃ
1. যার সাথে চুক্তি করেন তাকে বলে দিবেন যে খুব বেশি তারাহুরা না করতে, যাতে প্রতিদিন একটা ন্যুনতম লাইক আসে পেইজে। সংখ্যায় ৫০০-১০০০ হতে পারে।
2. ডিল করার আগে পেইজের যে আপনার পেইজ প্রমোট করবে তার পেইজের লিঙ্ক গুলো চাইবেন, ভালভাবে দেখে নিবেন যে পেইজের কোয়ালিটি কেমন, ঐ পেইজে কোন ধরনের ফ্যানরা আছে। মনে রাখবেন ঐ ফ্যানদের কিছু অংশই কিন্তু ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আপনার পেইজে আসবে।
3. ডিল করার আগে উক্ত ব্যক্তিকে বলবেন একটা ট্রাইয়াল দিতে, অর্থাৎ একবার শেয়ার দিতে পেইজ। দেখে নিন সে কিভাবে শেয়ার দিয়েছে, এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ে আপনার পেইজে কত লাইক আসছে। এতে আপনার আন্দাজ হয়ে যাবে যে সে কোন ধরনের মার্কেটিং করে আপনার পেইজে লাইক এনে দিচ্ছে।
4. ক্যাম্পেইন চলা কালীন যে সব পেইজ থেকে আপনার পেইজ শেয়ার দেয়া হচ্ছে, আপনি মাঝে মাঝেই চেক দিয়ে দেখুন, সে আজেবাজে কোন ক্যাপশান দিচ্ছে কিনা।
5. এধরনের ডিলের ক্ষেত্রে সবসময় পরিচিত কারও রেকমেন্ডেড কারও সাথে ডিল করুন।
ফেসবুক বিজ্ঞাপনঃ
ভাল বাজেট থাকলে আমার সাজেশন হবে ফেসবুক বিজ্ঞাপনের দিকেই জোড় দেয়া। অভিজ্ঞ কারও মাধ্যমে
ফেসবুক বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইন করা গেলে খুব ভালই সাড়া পাওয়া যায়। কিছু টিপস দিচ্ছি পেইড মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেঃ
• যদি আপনার পেইড ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য হয় লাইক বাড়ানো, তবে সব ক্যাম্পেইনের ক্ষেত্রে একটা কন্টেস্টের আয়োজন করুন। ধরুন একটা “লাইক এন্ড শেয়ার” কন্টেষ্ট করলেন। পুরষ্কার হিসেবে আপনারই ব্র্যান্ডের কিছু একটা। আর সেই কন্টেস্ট পোস্টটাই “স্পন্সর্ড স্টোরি” করে দিন। ৫০$ এর ক্যাম্পেইন যদি PPC 0.01$ রাখেন তবে মোটামুটি ৩৫০০ লাইক পাবেন। সাথে ২০০০ এর মত শেয়ার। যেখানে আপনি যদি শুধু নরমাল একটা পোস্ট শেয়ার করেন, তবে কত লাইক পাবেন সেটা ট্র্যাক করাই মুশকিল।
• ক্যাম্পেইনের ক্ষেত্রে ইমেজটা জরুরি, দক্ষ কোন ডিজাইনার দিয়ে ইমেজটা ডিজাইন করুন। আর যদি স্পন্সর্ড স্টোরি হয়ে থাকে তবে অবশ্যই একটা ৮০০X৪০০ বা কাছাকাছি সাইজের ছবি যুক্ত করে দিবেন, যাতে ভিজুয়াল মার্কেটিং হয়।
• “Like now” , “Like us and be with us” এই ধরনের লাইন এখন কঞ্জিউমারদের আর আকৃষ্ট করে নাহ। তাই এমন টেক্সট ব্যবহার করবেন যা কঞ্জিমারদের সাথে সাথেই এট্রাক্ট করবে, এবং কঞ্জিউমার লিঙ্কে ক্লিক করবে।
• এখন অধিকাংশ ফেসবুক মার্কেটিং এজেন্সিই ক্লায়েন্টকে শুধু ক্যাম্পেইন শেষে ক্লিক এর পরিমান দেখায়। ক্লায়েন্টের উচিত ক্যাম্পেইন শুরুতে ক্যাম্পেইন ডিজাইনটা দেখা নেয়া। কারণ ফেসবুক এড ম্যানেজা আমাদের অনেক বেশি সুবিধা দিয়েছে এড ক্যাম্পেইন ডিজাইনের ক্ষেত্রে। ধরুন আপনার প্রোডাক্ট গেজেট। আপনার পেইজে অবশ্যই গেজেট যারা লাইক করবে তাদেরই লাইক দরকার। তাই ক্যাম্পেইন ডিজাইনের সময় অডিয়েন্স ইন্টারেস্ট সিলেক্ট করে দিন “ইলেক্ট্রনিক্স, গেজেট, কম্পিউটার” এসব, বয়সের ক্ষেত্রে সিলেক্ট করে দিন “১৮-৩২”, অর্থাৎ আপনি আপনার যেমন কঞ্জিউমার বেইস দরকার ঠিক তেমনি একটা ফর্ম তৈরি করে নিবেন। নাহয় টাকা ঠিকই খরচ করবেন, কিন্তু কোন ভাল রেজাল্ট আসবে নাহ।
• লং টার্ম মার্কেটিং ক্যাম্পেইন হলে CPC (Cost Per Click) হিসেবে ক্যাম্পেইন চালানো উচিত। আর শর্ট টার্ম ক্যাম্পেইনে ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য ও ধরন অনুযায়ী CPM (Cost Per Impression) বা CPC (Cost Per Click) রাখা যেতে পারে। অবশ্যই এই দুটোর মধ্যে নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভাল ভাবে পর্যব্যক্ষণ করা দরকার।
• নিজে ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ড দিয়ে এড দিতে গেলে খেয়াল রাখবেন আপনি যেখানে আছেন সেই এড্রেস বিলিং এড্রেস হিসেবে দিবেন। যেকোন কার্ড ব্যবহার করবেন নাহ। ফেসবুকে অনেক ফ্রড হয় বলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অনেক কার্ড ব্লক করে রেখেছে। উক্ত কার্ড গুলোর মধ্যে কোনটা ব্যবহার করলে একাউন্টই বন্ধ করে দিতে পারে।
• কোন থার্ড পার্টি এজেন্সির মাধ্যমে যদি এড দেন, তবে আপনি নিজে তাদের ক্যাম্পেইন মনিটরিং করবেন। তারা কি লিখে প্রমোট করছে, কি ছবি এড করছে ইত্যাদি। আর বর্তমানে বেশ কিছু এজেন্সি আছে, যারা মোটামুটি এই ইন্ডাস্ট্রির সব মার্কেটিং করছে। এজেন্সি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সব গুলোর মধ্যে তুলনামূলক বিবেচনা করুন। ন্যায্য প্রাপ্য থেকে খুব বেশি চাইলে সেগুলোকে বর্জন করুন। কারণ আপনি তাদের অতিরিক্ত চাওয়া মেনে নিলে অন্যদেরও মানতে হবে। এতে মার্কেটের মূল্য বাড়তে থাকবে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়।
• যেকোন অফার ফেসবুক এডের মাধ্যমে প্রমোট করুন, এতে পরিচিতি বাড়ে।• এড দেয়ার ক্ষেত্রে নতুন লাইকারদের জন্য কিছু আকর্ষনীয় উপহার রাখুন। যেমন নতুন লাইকাররা ১০% ছাড় পাবে।
• অনেক এজেন্সিতে ন্যূনতম নিডের জন্য ২টাকা চাওয়া হয়। খেয়াল রাখবেন ন্যূনতম বিড মানে হল “0.01$”, যার বাংলা টাকাতে মূল্য বর্তমানে ৮০ পয়সা। আপনি ৮০ পয়সার এড পোস্ট করার জন্য ২টাকা কেন দিবেন? এসব ক্ষেত্রে ভাল ভাবে বিবেচনা করবেন।
-Collected

1 comment:

  1. আপনি Facebook এর সত্যিকারের লাইক এখান থেকে নিতে পারবেন। আপনি যতগুলো লাইক দেবেন, আপনার পেজেও ততগুলো লাইক পাবেন-
    LikeforLike - এই লিংক থেকে একাউন্ট খুলে ফেলুন।

    ReplyDelete